অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : রংপুরের প্রধান বিনোদন কেন্দ্র রংপুর চিড়িয়াখানায় অতিরিক্ত ৩০ টি হরিণ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কর্তৃপক্ষ। চিড়িয়াখানার নির্দিষ্ট ধারণ ক্ষমতার বেশি হরিণ থাকায় ব্যয় বেড়েছে চিড়িয়াখানার। গাদাগাদি করে থাকার জন্য তৈরি হচ্ছে হরিণের স্বাস্থ্যগত নানা সমস্যা। হরিণ বিক্রি করার নিয়ম থাকলেও আইনি জটিলতায় কিনতে পারছেন না আগ্রহীরা।
রংপুর চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ জানায়, এ চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৬২টি হরিণ রয়েছে। এসব হরিণ দুটি বেষ্টনীতে রাখা হয়েছে। গাদাগাদি করে থাকায় ঠিকমতো বিচরণ করতে পারছে না। রয়েছে খাবার সংকট। দুই বছর আগে সরকার নির্ধারিত মূল্য হিসেবে দেড় লাখ টাকায় তিনটি হরিণ বিক্রি করে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম জেলার চকবাজার এলাকার ব্যবসায়ী গহর সিরাজ জামিল হরিণ তিনটি ক্রয় করেন। একটি পুরুষ ও দুটি মেয়ে হরিণ ছিল। এর পর কেউ হরিণ ক্রয় করতে আসেনি।
কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক বছর আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে হরিণের দাম পুনর্নির্ধারণ করে দেয়া হয়। এতে বলা হয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত প্রাণী বিক্রি করতে পারবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এর আগে হরিণের দাম ৭০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হলেও তা কমিয়ে নতুন করে ৫০ হাজার টাকা করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় শুধু হরিণ ও ময়ূর বিক্রির অনুমোদন দিয়েছে। কারণ এ দুটির লালনপালন ও রক্ষণাবেক্ষণ অপেক্ষাকৃত সহজ।
আগ্রহীদের এসব প্রাণী নারী-পুরুষ জোড়া ধরেই ক্রয় করার নিয়ম।
রংপুর চিড়িয়াখানার কিউরেটর ডা. আম্বর আলী তালুকদার জানান, বর্তমানে রংপুর চিড়িয়াখানায় ৩১ প্রজাতির ২৬০টি প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে বাঘ ও সিংহ দুটি করে, জলহস্তী ৩টি, ময়ূর ৮টি, হরিণ ৬২টি, অজগর সাপ ২টি, ইমু ৩টি, উটপাখি ১টি, বানর ৯টি, কেশওয়ারি ১টি, গাধা ৮টি, ঘোড়া ২টিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি উল্লেখযোগ্য। দেশে দুটি সরকারি চিড়িয়াখানার মধ্যে রংপুর একটি।
বাসসের সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, বন্যপ্রাণী লালন-পালনের জন্য বন বিভাগের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। যাদের কাছে সেই অনুমোদনপত্র বা নো অবজেকশন সার্টিফিকেট থাকে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ শুধু তাদের কাছেই বিক্রি করতে পারেন। এই প্রাণীগুলো শুধু লালনপালনের জন্য দেওয়া হয়। পাচার বা খাওয়া যাবে না। সরকারি মূল্য কমানোর পর অনেকে হরিণ দেখতে আসেন। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে কিনতে পারছেন না।
ডা. আম্বর আলী বলেন, প্রদর্শনের জন্য ৩২টি হরিণই যথেষ্ট। অতিরিক্ত হরিণ হওয়ায় রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাড়ছে। প্রতিটি হরিণের দাম মাত্র ৫০ হাজার টাকা। একসাথে অন্তত এক জোড়া হরিণ কিনতে হবে। হরিণ দেখতে অনেকেই আসেন। তবে দাম শুনে চলে যান।
Leave a Reply